ঈমান ও ইসলাম ভঙ্গের ১০ কারন
কোন ব্যাক্তিই জান্নাতে যেতে পারবেনা যতক্ষন না সে পরিপূর্ণভাবে ঈমান আনে
। ঈমান আনা বলতে বুঝায় কোন বিষয়ের উপর দৃঢ় বিশ্বাস স্থানপন করা এবং ঈমান বিধ্বংসী কাজ
থেকে দুরে থাকা । ইসলামে ঈমান আনায়ন বলতে বুঝায়, যেমন আল্লাহ তাআলা বলেন-
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا آمِنُوا بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ
وَالْكِتَابِ الَّذِي نَزَّلَ عَلَى رَسُولِهِ وَالْكِتَابِ الَّذِي أَنْزَلَ مِنْ
قَبْلُ وَمَنْ يَكْفُرْ بِاللَّهِ وَمَلَائِكَتِهِ وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ وَالْيَوْمِ
الْآخِرِ فَقَدْ ضَلَّ ضَلَالًا بَعِيدًا
‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা ঈমান আনো
আল্লাহর প্রতি, তার রাসূলের প্রতি, সেই কিতাবসমূহের
প্রতি, যা তিনি তার রাসূলের উপর অবতীর্ণ করেছেন এবং সেই কিতাবের প্রতি, যা তিনি পূর্বে
অবতীর্ণ করেছিলেন। আর যে আল্লাহ, তার ফেরেশতামণ্ডলী, তার কিতাবসমূহ, তার রাসূলগণ এবং
শেষ দিবসকে অস্বীকার করবে, সে ঘোর বিভ্রান্তিতে পতিত হবে’ (নিসা, ৪/১৩৬)।
রাসূল সাঃ বলেন-
ঈমান হচ্ছে- আল্লাহ তা‘আলা, তার ফেরেশতামণ্ডলী, তার কিতাবসমূহ, তার
রাসূলগণ এবং পরকালকে সত্য বলে বিশ্বাস করা। এ ছাড়া তাক্বদীরের ভালো-মন্দের উপর (অর্থাৎ
জীবন ও জগতে কল্যাণ-অকল্যাণ যা কিছু ঘটছে, সবই আল্লাহর ইচ্ছায় হচ্ছে- এ কথার উপর বিশ্বাস করা) বিশ্বাস
স্থাপন করা। (সহীহ মুসলিম - ৮)
ইমানের বিষয় গুলো সুন্নত মোতাবেক মেনেনিয়ে ঈমান ভঙ্গকারি বিষয় গুলো থেকে
বিরত থাকলেই কেবল মিলবে জাহান্নাম থেকে নাজাত । এজন্য ইমানের বিষয়গুলো জানার পাশা পাশি
ঈমান ভঙ্গের কারণ গুলোও জানা অতন্ত্য জরুরী । আলোচ্য পোস্টিতে ১০ টি ঈমান ভঙ্গকারি
বিষয়কে বর্ণনা করা হলো-
১। আল্লাহর সাথে শিরক করাঃ
শিরক অর্থ হলো আল্লাহর
সঙ্গে সত্তা, গুণ ও ইবাদতে অন্য কাউকে শরিক বা অংশীদার করা। সহজ ভাষায় বললে, আল্লাহ
ব্যাতিত আর কারো ইবাদত করলে, অন্য কিছুকে আল্লাহর সমকক্ষ মনে করলে, অন্যকাউকে সর্বোচ্চ
সাহায্যকারি মনে করলে, তার গুণবাচক বিষয়গুলি অন্যকারো আছে বলে মনে করলে, যেমন কোন মাজারে,
বা কবরে গিয়ে কিছু চাইলে বা মানত করলে, আল্লাহ ব্যাতিত অন্য কারো নামে কুরবানি করলে
ইত্যাদি । মনে রাখতে হবে যে আল্লাহর সাথে শিরক কারি কখনো জান্নাতে যেতে পারবে না ।
তিনি বলেন,
إِنَّهُ مَنْ يُشْرِكْ بِاللهِ فَقَدْ حَرَّمَ اللهُ
عَلَيْهِ الْجَنَّةَ وَمَأْوَاهُ النَّارُ وَمَا لِلظَّالِمِيْنَ مِنْ أَنْصَارٍ
‘নিশ্চয়ই যে আল্লাহর সাথে শরীক স্থাপন করে আল্লাহ তা‘আলা তার জন্য জান্নাত
হারাম করে দেন এবং তার আবাসস্থল হয় জাহান্নাম। আর যালিমদের কোন সাহায্যকারী নেই’(মায়েদাহ ৭২)।
আর যে শিরক করবে না সে জান্নাতে যাবে, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন-
مَنْ
لَقِىَ اللهَ لاَ يُشْرِكُ بِهِ شَيْئًا دَخَلَ الْجَنَّةَ وَمَنْ لَقِيَهُ يُشْرِكُ
بِهِ دَخَلَ النَّارِ
‘যে ব্যক্তি কোন শিরক করা ব্যতীত আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ করবে (মৃত্যুবরণ
করবে) সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আর যে ব্যক্তি শিরক করা অবস্থায় মৃত্যু বরণ করবে সে
জাহান্নামে প্রবেশ করবে’[মুসলিম হা/৯৩।]
২। আল্লাহ ও বান্দার মাঝে কাউকে মাধ্যম তৈরি করে নেয়াঃ
যখন কেউ ভাবে আমিতো
অনেক গুনাহগার বা আমি তো অনেক কম সম্মানি মানুষ আমার কথা হয়ত আল্লাহ শুনবেন না, আমি
ডাকলে বা দোয়া করলে হয়ত তিনি কবুল করবেন তাই আমি সম্মানিত বা পরহেজগার কারো কাছে গিয়ে
দোয়া করি বা কোন মাজারে যাই বা কোন দেব দেবীর কাছে যাই, একে বলে মাধ্যম বানিয়ে নেয়া
। কিন্তু মনে রাখা ভালো হবে যে ব্যক্তি আল্লাহ এবং বান্দার মাঝে কাউকে মাধ্যম তৈরী
করে তাদেরকে ডাকে এবং তাদের নিকট শাফা‘আত কামনা করে, সে মুরতাদ হয়ে যাবে। কারণ শাফা‘আতের একমাত্র মালিক
আল্লাহ।
তিনি বলেন, قُلْ لِلَّهِ الشَّفَاعَةُ جَمِيْعًا لَهُ
مُلْكُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ
‘বলুন, সমস্ত সুফারিশ আল্লাহরই আয়াত্ত্বাধীন, আসমান ও যমীনে তাঁরই সাম্রাজ্য’(যুমার ৪৪)।
এক শ্রেণীর মানুষ আল্লাহকে ছেড়ে অন্যের ইবাদত করে এবং তাদেরকে সুফারিশকারী
হিসাবে গ্রহণ করে। অথচ তাদের সুফারিশ করার কোন ক্ষমতা নেই।
আল্লাহ বলেন,
وَيَعْبُدُوْنَ
مِنْ دُوْنِ اللهِ مَا لاَ يَضُرُّهُمْ وَلَا يَنْفَعُهُمْ وَيَقُوْلُوْنَ هَؤُلَاءِ
شُفَعَاؤُنَا عِنْدَ اللهِ قُلْ أَتُنَبِّئُوْنَ اللهَ بِمَا لاَ يَعْلَمُ فِي السَّمَاوَاتِ
وَلاَ فِي الْأَرْضِ
‘তারা উপাসনা করে আল্লাহকে বাদ দিয়ে এমন বস্ত্তর, যা না তাদের কোন ক্ষতিসাধন
করতে পারে, না পারে উপকার করতে এবং তারা বলে, এরা তো আল্লাহর কাছে আমাদের সুফারিশকারী।
তুমি বল, তোমরা কি আল্লাহকে এমন বিষয়ে অবহিত করছ, যে বিষয়ে তিনি অবহিত নন আসমান ও যমীনের
মাঝে’ (ইউনুস ১৮)।
আল্লাহ ছাড়া অন্যের উপর ভরসা করা কুফরী। যেমন কোন পীর, অলী-আউলিয়া, জীবিত
বা মৃত কোন বুযুর্গ বা বিশেষ কোন ব্যক্তির উপর ভরসা করে কোন কাজ শুরু করা। কেউ যদি
গুরু সহায়, খাজা ভরসা, ফাতেমা সহায়, রাসূল ভরসা ইত্যাদি বলে তাহলে শিরক হবে। একমাত্র
আল্লাহর উপরই ভরসা রাখতে হবে, অন্যথা ঈমান বিনষ্ট হবে।
৩। কাফির মুশরিককে কাফির মনে না করাঃ
যদি কোন মুসলিম
ব্যক্তি মুশরিকদেরকে কাফির মনে না করে অথবা তাদের কুফরীর ব্যাপারে সন্দেহ পোষণ করে
অথবা তাদের মতবাদসমূহ সঠিক মনে করে তাহলে ইসলাম ও ঈমান থেকে বের হয়ে যাবে । আল্লাহ
বলেন, إِنَّمَا
الْمُشْرِكُوْنَ نَجَسٌ ‘নিশ্চয়ই মুশরিকরা অপবিত্র’ (তওবা ২৮)।
মহান আল্লাহ বলেন,
إِنَّ
الَّذِيْنَ كَفَرُوْا مِنْ أَهْلِ الْكِتَابِ وَالْمُشْرِكِيْنَ فِيْ نَارِ جَهَنَّمَ
خَالِدِيْنَ فِيْهَا أُوْلَئِكَ هُمْ شَرُّ الْبَرِيَّةِ
‘নিশ্চয়ই আহলে কিতাবদের মধ্যে যারা কুফরী করেছে এবং শিরক করে তারা চিরস্থায়ী
জাহান্নামী এবং এরাই সৃষ্টির মধ্যে নিকৃষ্ট সৃষ্টি’ (বায়্যিনাহ ৬)।
যার কারণেই আল্লাহ এদের সাথে বিবাহ পর্যন্ত হারাম ঘোষণা করেছেন। মহান আল্লাহ
বলেন,
وَلاَ تَنْكِحُوا الْمُشْرِكَاتِ حَتَّى يُؤْمِنَّ وَلَأَمَةٌ
مُؤْمِنَةٌ خَيْرٌ مِنْ مُشْرِكَةٍ وَلَوْ أَعْجَبَتْكُمْ وَلاَ تُنْكِحُوا الْمُشْرِكِيْنَ
حَتَّى يُؤْمِنُوْا وَلَعَبْدٌ مُؤْمِنٌ خَيْرٌ مِنْ مُشْرِكٍ وَلَوْ أَعْجَبَكُمْ
أُوْلَئِكَ يَدْعُوْنَ إِلَى النَّارِ-
‘তোমরা মুশরিক নারীদেরকে বিবাহ কর না, যতক্ষণ না তারা ঈমান গ্রহণ করে। অবশ্য
মুসলিম ক্রীতদাসী মুশরিক নারী অপেক্ষা উত্তম, যদিও তাদেরকে তোমাদের কাছে ভাল লাগে।
তোমরা কোন মুশরিক পুরুষের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ো না, যে পর্যন্ত না সে ঈমান
আনে। একজন মুসলমান ক্রীতদাসও একজন মুশরিকের তুলনায় অনেক ভাল, যদিও তোমরা তাদের দেখে
মোহিত হও। তারা জাহান্নামের দিকে আহবান করে’ (বাক্বারাহ ২২১)।
৪। যদি কেউ রাসূল সাঃ এর সুন্নত মোতাবেক না চলেঃ
যদি কোন মুসলিম নবী
করীম (ছাঃ)-এর দেখানো পথ ব্যতীত অন্য কোন পথ পরিপূর্ণ অথবা ইসলামী হুকুমাত বা বিধান
ব্যতীত অন্য কারো তৈরী হুকুমাত উত্তম মনে করে, তবে সে ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে যাবে ।
যে ব্যক্তি এই বিশ্বাস করে যে, মানুষের তৈরী আইন ও বিধান ইসলামী শরী‘আত থেকে উত্তম বা
ইসলামের সমান, মানব সৃষ্ট বিধান দিয়ে বিচার-ফায়ছালা জায়েয, ইসলামী হুকুমাত বিংশ শতাব্দীর
জন্য প্রযোজ্য নয়, ইসলামই মুসলমানদের পিছিয়ে পড়ার কারণ, ইসলামের সাথে পরকালীন সম্পর্ক,
দুনিয়াবী কোন সম্পর্ক নেই- ওলামায়ে কেরামের ঐক্যমতে উক্ত বিষয়গুলো কুফরীর শামিল। কারণ
এটা হালালকে হারাম ও হারামকে হালাল করার হীন প্রচেষ্টা মাত্র।
আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের ফায়ছালা পরিত্যাগ করা কোন মুমিনের জন্য জায়েয হতে
পারে না। মহান আল্লাহ বলেন, وَمَا كَانَ لِمُؤْمِنٍ وَلاَ مُؤْمِنَةٍ
إِذَا قَضَى اللهُ وَرَسُوْلُهُ أَمْرًا أَنْ يَكُوْنَ لَهُمُ الْخِيَرَةُ مِنْ أَمْرِهِمْ
وَمَنْ يَعْصِ اللهَ وَرَسُوْلَهُ فَقَدْ ضَلَّ ضَلاَلاً مُبِيْنًا-
‘আল্লাহ ও তাঁর রাসূল কোন কাজের আদেশ করলে কোন ঈমানদার নারী-পুরুষের সে
বিষয়ে ভিন্ন সিদ্ধান্তের অধিকার নেই। যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আদেশ অমান্য করে সে
প্রকাশ্য পথভ্রষ্টতায় পতিত হবে’ (আহযাব-৩৬)।
সুতরাং আল্লাহ কর্তৃক কোন বিষয় নির্ধারিত হলে তা পরিবর্তন করার এখতিয়ার
কারও নেই।
৫। সুন্নাত কে অপছন্দ করলেঃ
যদি কোন মুসলমান
আল্লাহর নবী (ছাঃ)-এর আনিত বিধানের কোন অংশকে অপসন্দ করে তবে সে ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে
যাবে, যদিও সে ঐ বিষয়ে আমল করে।
এ ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَالَّذِيْنَ
كَفَرُوْا فَتَعْسًا لَهُمْ وَأَضَلَّ أَعْمَالَهُمْ، ذَلِكَ بِأَنَّهُمْ كَرِهُوْا
مَا أَنْزَلَ اللهُ فَأَحْبَطَ أَعْمَالَهُمْ
‘আর যারা কাফির তাদের জন্য রয়েছে দুর্গতি এবং তিনি তাদের কর্ম বিনষ্ট করে দিবেন। এটা এজন্য যে, আল্লাহ যা নাযিল করেছেন, তারা তা পসন্দ করে না। অতএব তাদের কর্মসমূহ আল্লাহ ব্যর্থ করে দিবেন’ (মুহাম্মাদ ৮-৯)।
৬। ইসলামের কোন বিধান কে নিয়ে হাসি ঠাট্টা করলেঃ
যদি কোন মুসলিম মুহাম্মাদ
(ছাঃ) আনিত ধর্মের কোন বিষয়ে অথবা ধর্মীয় ছওয়াব বা শাস্তির ব্যাপারে ঠাট্টা-বিদ্রূপ
করে তবে সেও কাফির হয়ে যাবে।
মহান আল্লাহ বলেন, قُلْ أَبِاللهِ وَآيَاتِهِ وَرَسُوْلِهِ
كُنْتُمْ تَسْتَهْزِئُوْنَ، لاَ تَعْتَذِرُوْا قَدْ كَفَرْتُمْ بَعْدَ إِيْمَانِكُمْ
‘আপনি বলুন, তোমরা কি আল্লাহর সাথে তাঁর হুকুম-আহকামের সাথে এবং তাঁর রাসূলের
সাথে ঠাট্টা করছিলে? ছলনা কর না, ঈমান আনার পর তোমরা যে কাফির হয়ে গেছ’ (তওবা ৬৫-৬৬)।
যারা ইসলাম নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করে তাদের আল্লাহর সাথে সাক্ষাতের কোন আশা
নেই।
আল্লাহ বলেন, فَنَذَرُ الَّذِيْنَ لاَ يَرْجُوْنَ لِقَاءَنَا
فِيْ طُغْيَانِهِمْ يَعْمَهُوْنَ
‘সুতরাং যারা আমার সাথে সাক্ষাতের আশা রাখে না, আমি তাদেরকে তাদের দুষ্টামীতে
ব্যতিব্যস্ত করে রাখি’ (ইউনুস ১১)।
এ ধরনের লোকদের সাথে উঠাবসা, চলাফেরা ত্যাগ করতে হবে, যতক্ষণ পর্যন্ত তারা
উক্ত আচরণ পরিত্যাগ না করে। মহান আল্লাহ বলেন,
وَقَدْ نَزَّلَ عَلَيْكُمْ فِي الْكِتَابِ أَنْ إِذَا
سَمِعْتُمْ آيَاتِ اللهِ يُكْفَرُ بِهَا وَيُسْتَهْزَأُ بِهَا فَلاَ تَقْعُدُوْا مَعَهُمْ
حَتَّى يَخُوْضُوْا فِيْ حَدِيْثٍ غَيْرِهِ إِنَّكُمْ إِذًا مِثْلُهُمْ إِنَّ اللهَ
جَامِعُ الْمُنَافِقِيْنَ وَالْكَافِرِيْنَ فِيْ جَهَنَّمَ جَمِيْعًا-
‘আর কুরআনের মাধ্যমে
তোমাদের প্রতি এই হুকুম জারী করে দিয়েছেন যে, যখন আল্লাহর আয়াত সমূহের প্রতি অস্বীকৃতি
জ্ঞাপন ও বিদ্রূপ করতে শুনবে, তখন তোমরা তাদের সাথে বসবে না, যতক্ষণ না তারা প্রসঙ্গ
পরিবর্তন করে। অন্যথা তোমরাও তাদেরই মত হয়ে যাবে। আল্লাহ মুনাফিক ও কাফিরদেরকে জাহান্নামে
একই জায়গায় সমবেত করবেন’ (নিসা ১৪০)।
এরূপ ব্যক্তিদের আল্লাহ নির্বোধ বলে ঘোষণা করেন এবং তাদেরকে বন্ধু রূপে
গ্রহণ করতেও নিষেধ করেন। তিনি বলেন,
يَا أَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُوا لاَ تَتَّخِذُوا الَّذِيْنَ
اتَّخَذُوْا دِيْنَكُمْ هُزُوًا وَلَعِبًا مِنَ الَّذِيْنَ أُوتُوْا الْكِتَابَ مِنْ
قَبْلِكُمْ وَالْكُفَّارَ أَوْلِيَاءَ وَاتَّقُوْا اللهَ إِنْ كُنْتُمْ مُؤْمِنِيْنَ،
وَإِذَا نَادَيْتُمْ إِلَى الصَّلاَةِ اتَّخَذُوْهَا هُزُوًا وَلَعِبًا ذَلِكَ بِأَنَّهُمْ
قَوْمٌ لاَ يَعْقِلُوْنَ-
‘হে মুমিনগণ! আহলে
কিতাবদের মধ্য থেকে যারা তোমাদের ধর্মকে উপহাস ও খেলা মনে করে, তাদেরকে এবং অন্যান্য
কাফিরদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ কর না। আল্লাহকে ভয় কর, যদি তোমরা মুমিন হও। আর যখন তোমরা
ছালাতের জন্য আহবান কর, তখন তারা একে উপহাস ও খেলা মনে করে। কারণ তারা নির্বোধ’ (মায়েদাহ ৫৭-৫৮)।
উপহাস করা মুনাফিকদের আলামত হিসাবে আল্লাহ রাববুল আলামীন উল্লেখ করেন,
وَإِذَا
لَقُوا الَّذِيْنَ آمَنُوْا قَالُوْا آمَنَّا وَإِذَا خَلَوْا إِلَى شَيَاطِيْنِهِمْ
قَالُوْا إِنَّا مَعَكُمْ إِنَّمَا نَحْنُ مُسْتَهْزِئُوْنَ
‘আর তারা যখন ঈমানদারদের সাথে মিশে, তখন বলে, আমরা ঈমান এনেছি। আবার যখন
তাদের শয়তানদের সাথে একান্তে সাক্ষাৎ করে, তখন বলে, আমরা তোমাদের সাথে রয়েছি, আমরাতো
(মুসলমানদের সাথে) উপহাস করি মাত্র’ (বাক্বারাহ ১৪)।
উল্লিখিত আয়াত সমূহে ধর্মে ঠাট্টা-বিদ্রূপ ও উপহাসকারীকে জাহান্নামী, নির্বোধ
ও মুনাফিকদের সাথে তুলনা করা হয়েছে এবং এদের সাথে চলাফেরা, উঠাবসাও সম্পূর্ণরূপে নিষেধ
করা হয়েছে।
৭। জাদু করাঃ
যদি কেউ যাদুর মাধ্যমে ভাল কিছু অর্জন বা
মন্দ কিছু বর্জন করতে চায় অথবা স্বামী-স্ত্রীর মাঝে সম্পর্ক স্থাপন বা ভাঙ্গন ধরাতে
গোপন, প্রকাশ্য, মন্ত্র-তন্ত্র করতে চায় অথবা কারো সাথে (ছেলে-মেয়ে) সম্পর্ক স্থাপন
বা বন্ধুত্বে ফাঁটল ধরাতে চায় তবে তা সম্পূর্ণরূপে কুফরী। যে ব্যক্তি এমন কাজ করবে
এবং যে ব্যক্তি এর প্রতি সন্তুষ্ট থাকবে উভয়ই কুফরী করল।
আবু হুরায়রাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,
اجْتَنِبُوا السَّبْعَ الْمُوبِقَاتِ قَالُوْا يَا رَسُولَ
اللهِ، وَمَا هُنَّ قَالَ الشِّرْكُ بِاللهِ، وَالسِّحْرُ، وَقَتْلُ النَّفْسِ الَّتِى
حَرَّمَ اللهُ إِلاَّ بِالْحَقِّ، وَأَكْلُ الرِّبَا، وَأَكْلُ مَالِ الْيَتِيْمِ،
وَالتَّوَلِّى يَوْمَ الزَّحْفِ، وَقَذْفُ الْمُحْصَنَاتِ الْمُؤْمِنَاتِ الْغَافِلاَتِ
‘তোমরা সাতটি ধ্বংসাত্মক
জিনিস থেকে বেঁচে থাক। ছাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেন, ঐ ধ্বংসাত্মক জিনিসগুলো কি? তিনি বললেন,
(১) আল্লাহর সাথে শিরক করা (২) যাদু করা (৩) অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা করা, যা আল্লাহ
হারাম করে দিয়েছেন (৪) সূদ খাওয়া (৫) ইয়াতীমের সম্পদ আত্মসাৎ করা (৬) যুদ্ধের ময়দান
থেকে পলায়ন করা (৭) সতী-সাধ্বী মুমিন মহিলাকে অপবাদ দেয়া’।[বুখারী হা/২৭৬৬; মুসলিম
হা/২৭২; মিশকাত হা/৫২]
দুটি কারণে যাদু শিরকের অন্তর্ভুক্ত :
১। যাদু বিদ্যায় শয়তানকে ব্যবহার করা হয় এবং তার সাথে সম্পর্ক স্থাপন করা
হয়।
২। যাদু বিদ্যায় ইলমে গায়েবের দাবী করা হয় এবং যাদুকরের জ্ঞান ও যাদুবিদ্যা
অর্জনের ক্ষেত্রে আল্লাহর অংশীদারিত্বের দাবী করা হয়। এটা নিঃসন্দেহে শিরক এবং কুফরীর
অন্তর্ভুক্ত।
যাদুকরের শাস্তি : যাদুকররা কাফির ও হত্যাযোগ্য অপরাধী। বাজালা (রহঃ) বলেন, আমি আহনাফ ইবনে কায়সের চাচা মাযই ইবনে মু‘আবিয়ার কাতেব (সচিব) ছিলাম। ওমর (রাঃ)-এর মৃত্যুর একবছর পূর্বে তাঁর লেখা একখানা পত্র আমাদের হস্তগত হল। তাতে লেখা ছিল, اقْتُلُوْا كُلَّ سَاحِرٍ ‘প্রত্যেক যাদুকরকে হত্যা কর’। [আবুদাউদ হা/৩০৪৩]
৮। কাফির মুশরিকদের সাহায্য সহযোগিতা করলেঃ
মুসলমানদের বিরুদ্ধে
মুশরিকদেরকে সাহায্য-সহযোগিতা করা। যদি কোন মুসলিম ব্যক্তি এমন কাজ করে তবে সে কুফরী
করল।
মহান আল্লাহ বলেন,
وَمَنْ
يَتَوَلَّهُمْ مِنْكُمْ فَإِنَّهُ مِنْهُمْ إِنَّ اللهَ لاَ يَهْدِي الْقَوْمَ الظَّالِمِيْنَ
‘তোমাদের মধ্যে যে তাদের (বিধর্মীদের) সাথে বন্ধুত্ব করবে, সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত
হবে। আল্লাহ তা‘আলা যালিমদেরকে পথ
প্রদর্শন করেন না’ (মায়েদাহ ৫১)
তিনি আরো বলেন,
يَا أَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُوا لاَ تَتَّخِذُوْا عَدُوِّيْ
وَعَدُوَّكُمْ أَوْلِيَاءَ تُلْقُوْنَ إِلَيْهِمْ بِالْمَوَدَّةِ وَقَدْ كَفَرُوْا
بِمَا جَاءَكُمْ مِنَ الْحَقِّ يُخْرِجُوْنَ الرَّسُولَ وَإِيَّاكُمْ أَنْ تُؤْمِنُوْا
بِاللهِ رَبِّكُمْ إِنْ كُنْتُمْ خَرَجْتُمْ جِهَادًا فِيْ سَبِيْلِيْ وَابْتِغَاءَ
مَرْضَاتِيْ تُسِرُّوْنَ إِلَيْهِمْ بِالْمَوَدَّةِ وَأَنَا أَعْلَمُ بِمَا أَخْفَيْتُمْ
وَمَا أَعْلَنْتُمْ وَمَنْ يَفْعَلْهُ مِنْكُمْ فَقَدْ ضَلَّ سَوَاءَ السَّبِيْلِ-
‘হে মুমিনগণ! তোমরা
আমার এবং তোমাদের শত্রুদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ কর না। তোমরা তো তাদের প্রতি বন্ধুত্বের
বার্তা পাঠাও, অথচ তারা তোমাদের কাছে যে সত্য এসেছে, তা অস্বীকার করেছে। তারা রাসূলকে
ও তোমাদেরকে বহিষ্কার করে এই অপরাধে যে, তোমরা তোমাদের পালনকর্তার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন
করেছ। যদি তোমরা আমার সন্তুষ্টি লাভের জন্য এবং আমার পথে জিহাদ করার জন্য বের হয়ে থাক,
তবে কেন তাদের প্রতি গোপনে বন্ধুত্বের পয়গাম প্রেরণ করছ? তোমরা যা গোপন কর এবং যা প্রকাশ
কর, তা আমি খুব জানি। তোমাদের মধ্যে যে এটা করে, সে সরল পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে যায়’ (মুমতাহিনা
১)।
পরের আয়াতেই মহান আল্লাহ বলেন,
إِنْ
يَثْقَفُوْكُمْ يَكُوْنُوْا لَكُمْ أَعْدَاءً وَيَبْسُطُوْا إِلَيْكُمْ أَيْدِيَهُمْ
وَأَلْسِنَتَهُمْ بِالسُّوْءِ وَوَدُّوْا لَوْ تَكْفُرُوْنَ
‘তোমাদেরকে করতলগত করতে পারলে তারা তোমাদের শত্রু হয়ে যাবে এবং মন্দ উদ্দেশ্যে
তোমাদের প্রতি বাহু ও রসনা প্রসারিত করবে এবং চাইবে যে কোনরূপে তোমরাও কাফির হয়ে যাও’ (মুমতাহিনা ২)।
এ আয়াত থেকে বুঝা যায় যে, সুযোগ পাওয়ার পর তারা মুমিনদের সাথে উদার ব্যবহার
করবে, তাদের কাছে এরূপ প্রত্যাশা করা দুরাশা মাত্র। তারা যখনই সুযোগ পাবে তাদের বাহু
ও জিহবা মুসলমানদের অনিষ্ট করার জন্য প্রসারিত করবে। এজন্য তাদের সাথে মিল রাখা ভবিষ্যতে
বড় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশংকা থাকায় এ আচরণ ত্যাগ করতে হবে। অন্যথা ঈমান হারা হয়ে যাবে।
৯। অন্য ধর্মের লোকেরা জান্নাতে যাবে এমন মনে করলেঃ
যে ব্যক্তি মনে করে
মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর শরীআত ব্যতীত অন্য কোন ধর্মে জীবন পরিচালনা করলেও জান্নাত পাওয়া
যাবে বা আল্লাহর সন্তুষ্টি পাওয়া সম্ভব, সে ব্যক্তি কাফির হয়ে যাবে।
মহান আল্লাহ বলেন,
وَمَنْ يَبْتَغِ
غَيْرَ الْإِسْلاَمِ دِيْنًا فَلَنْ يُقْبَلَ مِنْهُ وَهُوَ فِي الْآخِرَةِ مِنَ الْخَاسِرِيْنَ
‘যে ব্যক্তি ইসলাম ব্যতীত অন্য ধর্মকে গ্রহণ করবে তার কোন আমল গ্রহণ করা
হবে না এবং সে আখেরাতে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে’ (আলে ইমরান ৮৫)।
মহান আল্লাহ অন্যত্র বলেন,
وَمَنْ
يُشَاقِقِ الرَّسُوْلَ مِنْ بَعْدِ مَا تَبَيَّنَ لَهُ الْهُدَى وَيَتَّبِعْ غَيْرَ
سَبِيْلِ الْمُؤْمِنِيْنَ نُوَلِّهِ مَا تَوَلَّى وَنُصْلِهِ جَهَنَّمَ وَسَاءَتْ مَصِيْرًا
‘যে কেউ রাসূলের বিরুদ্ধাচরণ করে, তার কাছে সরল পথ প্রকাশিত হওয়ার পর এবং
সব মুসলমানের অনুসৃত পথের বিরুদ্ধে চলে, আমি তাকে ঐ দিকেই ফেরাব যে দিকে সে অবলম্বন
করেছে এবং তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করব। আর তা নিকৃষ্টতর গন্তব্যস্থান’ (নিসা ১১৫)।
মানুষ আল্লাহর দ্বীন ত্যাগ করে অন্য দ্বীন তালাশ করে, অথচ আসমান-যমীনে যা
কিছু আছে সবকিছুই আল্লাহর দ্বীন মেনে চলে। মহান আল্লাহ বলেন,
أَفَغَيْرَ
دِيْنِ اللهِ يَبْغُوْنَ وَلَهُ أَسْلَمَ مَنْ فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ طَوْعًا
وَكَرْهًا وَإِلَيْهِ يُرْجَعُوْنَ
‘তারা কি আল্লাহর দ্বীনের পরিবর্তে অন্য দ্বীন তালাশ করছে? আসমান ও যমীনে
যা কিছু রয়েছে স্বেচ্ছায় হোক আর অনিচ্ছায় হোক, তাঁরই অনুগত হবে এবং তাঁর দিকেই ফিরে
যাবে’ (আলে ইমরান ৮৩)।
এ আয়াত দ্বারা বুঝা যায়, জড় বস্ত্ত আল্লাহর দ্বীনের অনুগত হতে বাধ্য, আর
মানুষের বিষয়টিতো এর চেয়ে কঠিন। কারণ মানুষ আল্লাহর দ্বীন মানবে বলে রূহের জগতে ওয়াদাবদ্ধ
হয়ে এসেছে। যা লঙ্ঘন করলে চিরস্থায়ী জাহান্নামী হতে হবে।
১০। ইসলাম থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলেঃ
আল্লাহ মনোনীত দ্বীন
ইসলাম থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়া। যারা ইসলাম অনুসারে আমল করতে এবং শিক্ষা গ্রহণ করতে নারাজ,
এরকম ব্যক্তি কাফির।
মহান আল্লাহ বলেন,
وَمَنْ أَظْلَمُ
مِمَّنْ ذُكِّرَ بِآيَاتِ رَبِّهِ ثُمَّ أَعْرَضَ عَنْهَا إِنَّا مِنَ الْمُجْرِمِيْنَ
مُنْتَقِمُوْنَ
‘যে ব্যক্তিকে আল্লাহর আয়াত সমূহ দ্বারা উপদেশ প্রদান করা হয়, অতঃপর সে তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়, তার চেয়ে যালিম আর কে হতে পারে? নিশ্চয়ই আমি অপরাধীদেরকে শাস্তি দেব’ (সাজদাহ ২২)।
অন্যত্র তিনি বলেন,
وَمَنْ أَعْرَضَ
عَنْ ذِكْرِيْ فَإِنَّ لَهُ مَعِيْشَةً ضَنْكًا وَنَحْشُرُهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ أَعْمَى،
قَالَ رَبِّ لِمَ حَشَرْتَنِيْ أَعْمَى وَقَدْ كُنْتُ بَصِيْرًا، قَالَ كَذَلِكَ أَتَتْكَ
آيَاتُنَا فَنَسِيْتَهَا وَكَذَلِكَ الْيَوْمَ تُنْسَى-
‘যে আমার স্মরণ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে, তার জীবিকা সংকীর্ণ হবে এবং আমি তাকে
ক্বিয়ামতের দিন অন্ধ অবস্থায় উত্থিত করব। সে বলবে, হে আমার প্রতিপালক! কেন আমাকে অন্ধ
অবস্থায় উঠালেন? আমিতো চক্ষুষ্মান ছিলাম। আল্লাহ বলবেন, এমনিভাবে তোমার কাছে আমার আয়াত
সমূহ এসেছিল। অতঃপর তুমি সেগুলো ভুলে গিয়েছিলে। তেমনিভাবে আজ তোমাকে ভুলে যাব’ (ত্ব-হা
১২৪-১২৬)।
মানুষ নির্দ্বিধায় আল্লাহকে ভুলে অসৎ পথে চলে, পাপাচারে লিপ্ত হয়। প্রবৃত্তির
অনুসারী হতেও দ্বিধা করে না। কিন্তু হক্ব যদি প্রবৃত্তির অনুসরণ করত তবে আসমান-যমীন
বিশৃঙ্খল হয়ে পড়ত।
মহান আল্লাহ বলেন,
وَلَوِ اتَّبَعَ
الْحَقُّ أَهْوَاءَهُمْ لَفَسَدَتِ السَّمَاوَاتُ وَالْأَرْضُ وَمَنْ فِيْهِنَّ بَلْ
أَتَيْنَاهُمْ بِذِكْرِهِمْ فَهُمْ عَنْ ذِكْرِهِمْ مُعْرِضُوْنَ
‘সত্য যদি তাদের কাছে কামনা-বাসনার (প্রবৃত্তির) অনুসারী হ’ত, তবে নভোমন্ডল
ও ভূমন্ডল এবং এগুলোর মধ্যবর্তী সবকিছুই বিশৃঙ্খল হয়ে পড়ত’ (মুমিনূন ৭১)।
উপরোক্ত আলোচনা থেকে এটাই প্রতীয়মান হয় যে, ইসলামী আক্বীদাহ ও তাওহীদ গ্রহণের
পর যদি কেউ উপরোল্লিখিত বিষয়গুলিতে নিপতিত হয়, তবে সে ঈমান হারা হবে বা মুরতাদ হয়ে
যাবে। তার উপর মুরতাদের হুকুম (মৃত্যুদন্ড) ওয়াজিব হবে। যা কার্যকর করার মালিক হচ্ছেন
দেশের সরকার। কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠী এই দন্ড কার্যকর করার অধিকার রাখে না।
ইবনে আববাস (রাঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,
مَنْ
بَدَّلَ دِينَهُ فَاقْتُلُوْهُ ‘যে তার দ্বীন পরিবর্তন করল তাকে হত্যা কর’। [বুখারী
হা/৩০১৭।]
তবে তওবা করে নতুনভাবে ইসলাম গ্রহণ করলে ক্ষমাপ্রাপ্ত হবে। মহান আল্লাহ
বলেন,
قُلْ
يَا عِبَادِيَ الَّذِيْنَ أَسْرَفُوا عَلَى أَنْفُسِهِمْ لاَ تَقْنَطُوْا مِنْ رَحْمَةِ
اللهِ إِنَّ اللهَ يَغْفِرُ الذُّنُوْبَ جَمِيْعًا إِنَّهُ هُوَ الْغَفُوْرُ الرَّحِيْمُ
‘বলুন, ‘হে আমার বান্দাগণ যারা নিজেদের উপর যুলুম করেছ তোমরা আল্লাহর রহমত
থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সমস্ত গোনাহ মাফ করেন। তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু’
(যুমার ৫৩)।
মহান আল্লাহর দরবারে এই প্রার্থনা, যেন তিনি আমাদেরকে বিষয়গুলো বুঝে তা
থেকে দূরে থাকার তাওফীক্ব দান করেন। -আমীন!
0 মন্তব্যসমূহ
Don't forget to Comment!