ঈমানের শাখা সমূহ
আবু হুরাইরা (রাঃ) নবী করীম (সা.) থেকে বর্ণনা করেছেন, রাসূলুল্লাহ্ (সা.) বলেছেনঃ “ঈমান ষাট কিংবা সত্তরের চেয়ে কিছু বেশী শাখায় বিভক্ত। তার মধ্যে সর্বোত্তম (সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ, কিংবা সর্বোচ্চ অথবা সর্বাধিক মর্যাদাপূর্ণ) হচ্ছে 'লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ' (আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই) একথার ঘোষণা দেয়া। আর সর্বনিম্ন শাখা হচ্ছে রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক কোন জিনিস সরিয়ে ফেলা। আর লজ্জাও ঈমানের একটি অংশ।
একজন মুসলিম হিসাবে ঈমানের প্রতিটি শাখা সম্পর্কে জানা খুবই জরুরি এতে করে ঈমানের প্রতিটি বিষয় সম্পর্কে সম্মূখ জ্ঞান থাকবে। প্রতি পর্বে আমরা বেশ কয়েকটি করে শাখা আলোচনা করবো ইনশাআল্লাহ । {alertSuccess}
শাখা-১. আল্লাহর প্রতি ঈমান আনা
আল্লাহর প্রতি ঈমান সম্পর্কে আল্লাহ্ সুবহানাহু তা'আলা বলেন,
وَالْمُؤْمِنُونَ ۚ كُلٌّ آمَنَ بِاللَّهِ
“আর মুমিনরা প্রত্যেকেই
আল্লাহর প্রতি ঈমান রাখে।” (সূরা আল-বাকারা ২৮৫) । আরও বলা হয়েছে
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا آمِنُوا بِاللَّهِ
“হে ঈমানদারগণ! তোমরা
আল্লাহর প্রতি পূর্ণ বিশ্বাস রাখো।' (সূরা আন নিসা ১৩৬)
সহীহ আল-বুখারী ও সহীহ মুসলিমে আবু হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নবী করীম (সা.) বলেছেন
“যতক্ষণ মানুষ এ সাক্ষ্য
না দেবে যে, আল্লাহ ছাড়া আর কোনো ইলাহ নেই', ততক্ষণ পর্যন্ত আমি তাদের বিরুদ্ধে লড়াই
করতে আদিষ্ট হয়েছি। কাজেই যে ব্যক্তি স্বীকার করে নেবে যে, আল্লাহ ছাড়া আর কোনো ইলাহ
নেই সে আমার থেকে তার জীবন ও সম্পদকে নিরাপদ করে নিল। তবে শরীআহসম্মত কোনো কারণ ঘটলে
তা ভিন্ন কথা। আর তার (কৃতকর্মের) হিসাব-নিকাশ আল্লাহর কাছে।” [বুখারী-১৩৯৯ ও
মুসলীম-২০]
উসমান (রাঃ) থেকে বর্ণিত নবী করীম (সা.) বলেছেনঃ
مَن ماتَ وهو يَعْلَمُ أنَّه لا إلَهَ إلَّا اللَّهُ، دَخَلَ الجَنَّةَ
“যে ব্যক্তি এই বিশ্বাস
নিয়ে মারা যাবে- আল্লাহ ছাড়া আর কোনো ইলাহ্ নেই, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।”
উমর ইবনু হাফ্স (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি আল্লাহর সঙ্গে শির্ক করা অবস্থায় মারা যায়, সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে। আমি বললাম, যে আল্লাহর সঙ্গে কোন কিছুর শির্ক না করা অবস্থায় মারা যায়, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। [বুখারী - ১১৬৬]
শাখা-২ ফেরেশতাদের প্রতি ঈমান আনা
এ বিষয়ে পরিপূর্ণ ঈমান রাখা যে আল্লাহ তাআলা অসংখ্য ফেরেশতা সৃষ্টি করেছেন
নুর দ্বারা এবং এরা সৃষ্টিগত ভাবে আল্লাহর অনুগত । তারা কখনও আল্লাহর আদেশের অবাধ্য
হন না, বরং যা হুকুম হয় তা তাৎক্ষণিক পালন করেন । তারা দিবা রাত্রী আল্লাহর তাসবীহ
পাঠ করেন এবং কখনো ক্লান্ত হন না । ফেরেশতাদের সংখ্যা আল্লাহ ছাড়া আর কেউ জানেন না
। আল্লাহ তাদেরকে বিভিন্ন প্রকার দায়িত্ব দিয়ে অপর্ণ করেছেন ।
আল্লাহ্ সুবহানাহু তা'আলা ইরশাদ করেন,
রসূল (সাঃ) তার প্রতিপালকের পক্ষ হতে যা তার প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে তাতে ঈমান
এনেছে এবং মু’মিনগণও। তারা সবাই
আল্লাহর উপর, তাঁর ফেরেশতাদের উপর, তাঁর কিতাবসমূহের উপর এবং রসূলগণের উপর বিশ্বাস
স্থাপন করেছে, (তারা বলে), ‘আমরা রসূলগণের মধ্যে কারও ব্যাপারে তারতম্য করি না’ এবং তারা এ কথাও
বলে যে, ‘আমরা শুনেছি এবং মেনে নিয়েছি। হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে ক্ষমা কর আর
প্রত্যাবর্তন তোমারই দিকে’। [সুরা বাকারা আয়াতঃ ২৮৫]
আবূ হুরাইরাহ (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম জনসমক্ষে উপবিষ্ট ছিলেন, এমন সময় তাঁর নিকট জনৈক ব্যক্তি এসে জিজ্ঞেস
করলেন ‘ঈমান কী?’ তিনি বললেনঃ ‘ঈমান হল, আপনি বিশ্বাস রাখবেন আল্লাহর প্রতি, তাঁর ফিরেশতাদের
প্রতি, (কিয়ামতের দিন) তাঁর সঙ্গে সাক্ষাতের প্রতি এবং তাঁর রাসূলগণের প্রতি। আপনি
আরো বিশ্বাস রাখবেন পুনরুত্থানের প্রতি। (সংক্ষিপ্ত) (বুখারি - ৫০)
0 মন্তব্যসমূহ
Don't forget to Comment!